পড়াশোনায় মোটামুটি? মাধ্যমিক পাসের পর একগুচ্ছ স্কলারশিপের সুযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বিশাল সুখবর। সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। খাতা স্ক্রুটিনি ও রিভিউ এরও রেজাল্ট চলে এসেছে। যদিও বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীই বিভিন্ন পছন্দমতো শাখায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে তবে পুনারায় খাতা দেখার পর অনেক শিক্ষার্থীরই মোট ও গড় নম্বর বেড়েছে। যারপরনাই মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় সূক্ষ্ম পরিবর্তন হয়েছে। কেউ তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন তো কারও আবার Rank পতন হয়েছে।

   

মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের প্রায় দেড়মাস হতে চললো। ফলপ্রকাশের মোটামুটি ৩ মাসের মধ্যে বা রেজিষ্ট্রেশনের ঠিক আগ পর্যন্ত একাদশে শাখা পরিবর্তন করতে পারবেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল না হয়ার জন্য ভালো রেজাল্ট করা সত্ত্বেও অনেকেরই পছন্দ অনুযায়ী শাখা বা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা হয়ে ওঠে না। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখন মোটামুটি পড়াশোনায় ভালো, এমন শিক্ষার্থীরাও যাতে উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্য একাধিক স্কলারশিপ দিয়ে থাকে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। আজকের এই প্রতিবেদনে তেমনই গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ সরকারি বৃত্তি সম্বন্ধে আলোচনা করতে চলেছি।

স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ:-

পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য সবচেয়ে বড়ো স্কলারশিপ হলো স্বামী বিবেকানন্দ বা বিকাশ ভবন স্কলারশিপ। মাধ্যমিক পাসের পর ছাত্র ও ছাত্রী উভয়ই এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। এই স্কলারশিপের অধীনে পড়ুয়াদের বার্ষিক ১২,০০০ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে।

এই স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও আবেদনের শর্ত সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে নীচের লিঙ্কে যান।

স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপে আবেদন করুন।

নবান্ন স্কলারশিপ:-

রাজ্য সরকার দেয় পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় স্কলারশিপ হলো নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপ। অনেকে এই বৃত্তি কে মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister Scholarship) স্কলারশিপ নামেও চেনেন। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে এই স্কলারশিপের টাকা প্রদান করা হয়, তাই এটি চিফ মিনিস্টার স্কলারশিপ নামেও পরিচিত।

যেসকল পড়ুয়ারা ৫০ শতাংশ বা তার বেশি কিন্তু ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছেন, তারা এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য যোগ্য। এই স্কলারশিপ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে নীচের প্রতিবেদনটি পড়ুন।

নবান্ন স্কলারশিপে আবেদন করুন।

ওয়েসিস স্কলারশিপ:-

ওয়েসিস স্কলারশিপ হলো অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণ দপ্তর কর্তৃক তপশিলি জাতি ও উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীকে প্রদত্ত একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৃত্তি। এই স্কলারশিপ ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে সমাজের পিছিয়ে পড়া স্টুডেন্টদের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্য হিসেবে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।

এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য বিদ্যার্থীরা বর্তমানে যে কোর্সে পাঠরত তার আগের শ্রেণীতে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে এবং পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার মধ্যে হতে হবে। মাধ্যমিক পাস ছেলে মেয়েরা এই স্কলারশিপে আবেদন করুন।

এই স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে নীচের প্রতিবেদনটি পড়তে অনুরোধ করা হচ্ছে।

ওয়েসিস স্কলারশিপে আবেদন করুন।

ওয়েসিস স্কলারশিপ আবেদন প্রক্রিয়া।

ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ:-

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠরত সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের পঞ্চাশ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাসের পর এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। মূলত রাজ্যে বসবাসকারী খ্রিস্টান, মুসলমান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ প্রভৃতি ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের প্রত্যেক বছর ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার।

এই স্কলারশিপ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে নীচের প্রতিবেদনে যান।

ঐক্যশ্রী স্কলারশিপে আবেদন করুন।

কন্যাশ্রী প্রকল্প:-

স্কুলছুট ছাত্রীদের সংখ্যা কমানো ও নারীশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের। এটি মূলত একটি প্রকল্প যার মাধ্যমে ১৩-১৮ বছর বয়সী ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য প্রত্যেক মাসে ৭৫০ টাকা করে দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। এবং ১৮ বছর বয়সে এককালীন ২৫,০০০ টাকা অর্থসাহায্য দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পাশাপাশি ছাত্রীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধান সংক্রান্ত বিভিন্ন কিট ও প্রদান করা হয় স্কুলে স্কুলে।

এই স্কলারশিপের জন্য ছাত্রীদের ১৩ বছর বযসে নিজ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাম নথিভুক্ত করতে হয় এবং প্রত্যেক বছর আবেদন রিন্যুয়াল করতে হয়। কন্যাশ্রী তে নাম নথিভুক্ত করতে ছাত্রীদের পরিবারের বার্ষিক আয় ১,২০,০০০ টাকার মধ্যে হতে হবে। তবে যেসকল ছাত্রীর মাতা পিতা নেই বা বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রীদের ক্ষেত্রে পারিবারিক আয়ের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। ১৩-১৮ বছর বয়সীদের এই প্রকল্পের প্রথম ধাপ K1। বর্তমানে কন্যাশ্রী প্রকল্প বিশ্ব চরাচরে সমাদৃত।

দ্রষ্টব্য:- রেগুলার কোর্সে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা যেকোনো শিক্ষাবর্ষে কেবল একটিই সরকারি স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সরকারি স্কলারশিপ সম্বন্ধে প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ও নিত্যনতুন, বিস্তারিত খবরের সন্ধান পেতে গুগল নিউজ ও টেলিগ্রাম আমাদের ফলো করতে পারেন।

টেলিগ্রাম চ্যানেল:- Link

গুগল নিউজ:- Link