গরমের তীব্র দাবদাহ থেকে রেহাই পেতে এই জায়গাগুলি থেকে ঘুরে আসুন। স্বস্তি পাবেন অনেকটাই।

গ্রীষ্মের অসহ্য দাবদাহ থেকে স্বস্তি পেতে বেড়িয়ে আসুন এই জায়গাগুলি থেকে। আরাম পাবেন অনেকটাই। আজ আলোচনা করবো ভারতের কিছু এমন ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে যেগুলিতে এই গরমকালে গেলে স্বস্তি তো মিলবেই, পাশাপাশি কিছু সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সৌভাগ্যও হবে। তবে আর দেরি না করে আজই বেড়িয়ে পড়ুন সফরে। উপভোগ করুন কিছু সুন্দর মূহুর্ত এবং স্মৃতি তৈরি করে মনের মনিকোঠায় রেখে দিন।

   

চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ শুরু হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশে। দিনকে দিন গরমের পরিমাণ অসহ্য থেকে অসহ্যতর হয়ে উঠছে। তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গেই কোথাও কোথাও ৪০’ এর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। আবহাওয়া খুব খামখেয়ালি। আবহাওয়া ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ভারত মহাসাগরীয় উষ্ণ বায়ুর তাপপ্রবাহের কারণে এই তীব্র গ্রীষ্ম শুরু হয়েছে। তবে সুউচ্চ হিমালয় পেরিয়ে এই তাপপ্রবাহ উত্তরে জেতে পারছে না। দিনের বেলা সূর্যতাপ এতটাই থাকছে যে মানুষ হাঁসফাঁস করছেন। এমতবস্থায় স্বস্তি পেতে ভরসা পাহাড় ভ্রমণ।

বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন এই তাপপ্রবাহ বৈশাখেও থাকবে। এমনকি পহেলা বৈশাখে কালবৈশাখী হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের কিছু অংশে। অগ্রিম গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহের কারণে আগেভাগেই স্কুল-কলেজও বন্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ হলে, এই ভীষণ গরমে কিছুদিন আরাম পেতে আপনার কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে নীচের স্থানগুলি ঘুরে আসতে পারেন। গরমে শীতের আমেজ উপভোগ করতে পারবেন এই জায়গাগুলিতে গেলে।

আরও পড়ুনঃ চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে এই ১০ টি বিষয় মাথায় রাখুন।

১) গুলমার্গ

gulmarg-kashmir

গুলমার্গ হলো কাশ্মীরে অবস্থিত একটি পাহাড়ি স্টেশন। এটি ট্যুরিস্টদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এটি খুব উঁচুতে অবস্থিত হওয়ায় আকাশের খুব কাছে মনে হয়। এখানকার আরেকটি দর্শনীয় স্থান হলো বরমুল্লা গ্রাম যেটি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্গত। গুলমার্গ শহরটি জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে প্রায় ৫০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত।

এই গ্রীষ্মে গুলবার্গের গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে। কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশন জম্মু রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশন থেকে এর দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার। আপনি শ্রীনগর এয়ারপোর্টে নেমেও এখানে আসতে পারেন। ট্রেকিং এর জন্য এটি একটি ভালো স্থান।

২) কুল্লু

kullu-manali

কুল্লু হিমাচল প্রদেশে ব্যাস নদীর তীরে অনেক উচ্চতায় অবস্থিত একটি জনবহুল শহর। পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান এটি। এখানকার অন্যান্য ঘোরার জায়গাগুলি হলো শোলাং উপত্যকা ও পার্বতী উপত্যকা। যারা প্যারাগ্লাইডিং এর অভিজ্ঞতা নিতে চাইছেন তাদের জন্য এটি উপযুক্ত স্থান।

গরমকালে এখানকার তাপমাত্রা ১৬′C থেকে ২৭′C এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে। কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশন যোগীন্দ্রনগর রেলওয়ে স্টেশন যেটির কুল্লু থেকে দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার এবং কুল্লু মানালী এয়ারপোর্ট থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার।

৩) মুসৌরি

মুসৌরি উত্তরাখণ্ড রাজ্যে অবস্থিত একটি শৈলশহর। উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুন থেকে এটি প্রায় ৩৫ কিমি দূরত্বে অবস্থিত। মুসৌরি শহরটি প্রধানত গারহ্বল হিমালয়ান রেঞ্জের পাদদেশে অবস্থিত। শহরের অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হননি এমন পর্যটক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। উত্তরাখন্ড বেড়াতে এলে এই স্থানে অবশ্যই আসবেন।

mussoorie-uttarakhand

শহরটির গ্রীষ্মকালীন গড় তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। দেহরাদুন মুসৌরির নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন। দূরত্ব ৩৫ কিমি। এছাড়া ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত জোলিগ্র্যান্ট এয়ারপোর্ট এর নিকটতম ফ্লাইট স্টেশন।

আরও পড়ুনঃ ১০২ বছর বয়সে গণিতে নোবেল পেলেন ভারতের কল্যামপুডি রাধাকৃষ্ণ রাও।

৪) সান্দাকপুর

ভারত-নেপাল সীমান্তে সিঙ্গালীলা পর্বতশ্রেণীর অবস্থিত সান্দাকপুর বা সান্দাকফু হল একটি শৈলশহর। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত এটি এই রাজ্যের উচ্চতম স্থান। এর নিকটবর্তী উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলি হলো সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্ক। এখানে একটি ছোট্ট গ্রাম রয়েছে এবং সেখানে পর্যটকদের থাকার জন্য কিছু হোটেলও রয়েছে।

sandakphu-darjeeling

সমুদ্রতল থেকে ৩,৬৩৬ মিটার উঁচুতে অবস্থিত গ্রীষ্মকালে এখানকার গড় উষ্ণতা ১৯’ সেলসিয়াস যার ফলে শীতের আমেজ উপভোগ করতে পারবেন। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন (দূরত্ব ৬০ কিমি)। এছাড়া বাগডোগড়া এয়ারপোর্টে নেমেও (দূরত্ব ৫০ কিমি) এখানে আসতে পারেন।

৫) ফুন্টশোলিং

phuntsholing-bhutan

ভারত-ভূটান সীমান্তে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবিন্দুতে অবস্থিত ফুন্টশোলিং শহর। পিকনিক ও ভ্রমণের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

এখানকার গ্রীষ্মকালীন গড় তাপমাত্রা ২৬’c-৩২’c এর মধ্যে থাকে। অন্যান্য স্থানগুলির তুলনায় তাপমান কিছুটা বেশি হলেও এই তীব্র গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে কিছুটা তো আরাম মিলবে।

Like Facebook Page