নার্সারির ব্যবসা করে মাসে আয় করুন পঞ্চাশ হাজার টাকা। কীভাবে শুরু করবেন?

আজ একটি এমন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করবো বাজারে যেটির প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম রয়েছে এবং এই ব্যবসা করে আপনি প্রতিমাসে কুড়ি হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার বা তারও বেশি টাকা রোজগার করতে পারবেন। এই ব্যবসা শুরু করতে কত পুঁজি দরকার, কি কি কাঁচামাল প্রয়োজন সমস্ত তথ্য জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়তে অনুরোধ করা হচ্ছে।

   

আজকের প্রতিবেদনে নার্সারির ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। এটি এমন এক ব্যবসা মার্কেটে যার চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কিন্তু সেই তুলনায় প্রতিযোগিতা একেবারেই কম। শহরে হোক কিংবা গ্রামে, বর্তমানে নিজের বাসস্থানে একটুকরো বাগান করার শখ সবারই আছে। তাই আপনি যদি অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করতে চাইছেন তাহলে আজই শুরু করুন এই ব্যবসা।

যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় উপাদান:-

নার্সারি করার জন্য সবার প্রথমে আপনার কিছু পরিমাণ জায়গা অবশ্যই প্রয়োজন। একটি ছোটো নার্সারি করতে মোটামুটি ১-২ কাঠা মতো জায়গা দরকার আর বড়ো নার্সারি করতে চাইলে ৩-৬ কাঠা বা তার চেয়ে কিছু বেশি জমিতে করতে পারেন। নার্সারি ছোটো হোক বা বড়ো মাটি খোড়ার জন্য, কোদাল, শাবল, খুরপি এগুলি জোগাড় করে রাখবেন।

আবেদন করুন প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সন্মান নিধি যোজনায় এবং পেয়ে যান বার্ষিক ৬ হাজার টাকা

এছাড়া নার্সারি করার জন্য আপনাকে কিছু কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হবে। সেগুলি হল-
• ফুল, ফল অথবা যে শৌখিন গাছ চাষ করতে চাইছেন তার বীজ সংগ্রহ করুন।
• নির্দিষ্ট গাছের উপযুক্ত মাটি কিনুন অথবা তৈরি করতে শিখুন।
• প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশক।
• গাছ বসানোর টব (মাটি/প্লাস্টক/সিরামিকের)।
• হরমোন পাউডার।
• জল দেয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা (মোটর ও পাইপ/পাম্পিং মেশিন হলে ভালো হয়)।

পুঁজি ও ইনভেস্ট:-

একটি ছোটো নার্সারি করতে হলে প্রাথমিকভাবে ২০-৩০ হাজার টাকা এবং বড়ো নার্সারির জন্য মোটামুটি ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনভেস্ট করতে হবে আপনাকে। নার্সারি করার জন্য প্রয়োজনীয় জমি এখানে ধরা হয়নি। যদি জমি না থাকে তবে কেনা জমির দাম সংযোজিত হবে। এছাড়া আপনি নার্সারির সমস্ত কাজ একা সামলাতে পারবেন না। তাই গাছ দেখভালের জন্য একজন লোক রাখতেই হবে।

গাছ প্রতিপালনের ট্রেনিং:-

নার্সারি করার জন্য আপনাকে যে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটটি শিখতে হবে তা হলো গাছ পরিচর্যা করা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি দপ্তরের ওয়েবসাইটে, নার্সারি করার জন্য কোথায় ট্রেনিং নেবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে। এছাড়া বিডিও অফিসের অধীন কৃষি দপ্তরেও বিনামূল্যে নার্সারির জন্য ট্রেনিং দেওয়া হয় ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। সেইসঙ্গে প্রথম ব্যবসা শুরু করার জন্য উদ্ভিদের বীজ দেওয়া হয় এবং আর্থিক সাহায্য হিসেবে লোন প্রদান করা হয়ে থাকে।

মার্কেটিং ও সেলিং:-

নার্সারি শুরু করার মোটামুটি ২-৩ মাস গাছ যখন বিক্রির জন্য উপযুক্ত হবে তখন আপনি সরাসরি হোর্ডিং লাগিয়ে ও প্রচার চালিয়ে আপনার প্রোডাক্টের সেলিং শুরু করতে পারবেন। এছাড়া লিফ্লেট ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও আপনার পার্শ্ববর্তী ও বাইরের মানুষের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন আপনার বাগানের গাছ কেনা সম্বন্ধে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে আপনার প্রোডাক্টের সেলিং এর প্রচার করতে পারেন। তাহলে অল্প সময়ে বেশী সংখ্যক মানুষের কাছে আপনার বিজনেস ছড়িয়ে যাবে।

ভালোভাবে কাজ করলে মোটামুটি ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে আপনার ব্যবসায় ভালো পরিমাণ লাভ দেখতে পারবেন।তখন আপনা ব্যবসাকে প্রসারিত করুন। পারতপক্ষে আপনার নার্সারি ব্যবসা বিষয় একটা ওয়েবসাইট খুলুন। সেখানেও সেলিং অপশন যুক্ত করুন। এভাবে মোটামুটি এক দেড় বছর পর আপনি মাসে পঞ্চাশ হাজার বা তারও বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

Like Facebook Page