রাস্তায় যান নিয়ে বেরোনোর আগে মাথায় রাখুন এই ১২ নিয়ম। নাহলে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা।

আপনি যদি নতুন দুইচাকা (বাইক) বা চারচাকা গাড়ি কিনে থাকেন এবং যানবাহনের সওয়ারী হন কিম্বা যান চালিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে ভ্রমণ করে থাকেন তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য। ২০২৩ সালে ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত নিয়মাবলির পরিবর্তন হয়েছে। আগের থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত জরিমানা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পুলিশি ঝামেলা ও ট্রাফিকের জরিমানা এড়িয়ে চলতে মাথায় রাখতে হবে বেশ কিছু নিয়ম।

   

যারা মোটর ইঞ্জিন চালিত যানের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন- রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সম্মুখীন হতে হয় ভ্রমণকারীদের। অনেক সময়ই দেখা যায় Traffic Rules ঠিকমতো না জানার কারণে অথবা তাড়াহুড়ায় ভুলবশত ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। এমতাবস্থায় বড়সড় জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে যান চালকদের।

সম্প্রতি ট্রাফিক আইনে বদল এনেছে সরকার। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো, আরোহীর হেলমেট না পড়া, অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো সহ একাধিক বিষয়ে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীকে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়। তবে এখন থেকে যাতে জরিমানার মুখে না পড়তে হয় তার জন্য নতুন ট্রাফিক আইন সম্বন্ধে বেশ কিছু নিয়মাবলি নীচে আলোচনা করা হলো।

আরও পড়ুন: রেলওয়ে এনটিপিসি নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আপডেট।

ট্রাফিক আইন ২০২৩ নিয়মাবলি একনজরে :-

১) সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে আপনাকে।
২) যানচালক হেলমেট চাড়া বাইকচালালে ২,০০০ টাকা এবং আরোহী হেলমেট না পড়লে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন করতে পারে ট্রাফিক চেকিং এর দায়িত্বে থাকা সাব ইন্সপেক্টর।
৩) যদি গাড়ির চালক রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট ছাড়া গাড়ি চালান তবে তবে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন হবে।
৪) গাড়ির বিমা করানো না থাকলে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন করতে পারে ট্রাফিক পুলিশ।
৫) ১৮ বছরের নীচে কেউ গাড়ি চালানো অবস্থায় ধরা পড়লে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইনের সম্মুখীন হতে পারেন।
৬) চারচাকা যুক্ত যানের ক্ষেত্রে সিট বেল্ট না বাঁধলে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন করতে পারে ট্রাফিক গার্ড।
৭) দুচাকা হোক কিম্বা চারচাকা গাড়িতে অতিরিক্ত লোক বসলে বাড়তি লোক পিছু ১,০০০ টাকা করে জরিমানা গুণতে হবে।
৮) বেঁধে দেওয়া গতির সীমা অতিক্রম করলে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।
৯) ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অনুচিত ঝামেলা করলে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন চালান কাটতে হতে পারে।
১০) দমকলের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স কে রাস্তা ছেড়ে না দিলে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে ট্রাফিক গার্ডের অফিসার।
১১) গাড়ির চালক অ্যালকোহলিক হয়ে গাড়ি চালালে ১০,০০০ টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য থাকবে। সেইসঙ্গে ৬ মাসের জেল হতে পারে।
১২) একই ভুল দ্বিতীয়বার করলে ১৫,০০০ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ২ বছরের জেল হতে পারে।

তবে ট্রাফিক আইনের নিয়মাবলি পরিবর্তনের সাথে আরেকটি নতুন নিয়মাবলি নতুন আইনে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে এখন থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির বিমা ও রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট এর হার্ডকপি ট্রাফিক গার্ডকে দেখাতে না পারলেও অসুবিধা নেই। সেক্ষেত্রে ডিজিলকার অথবা এমপরিবহন নামক অ্যাপে ডাউনলোড করা ডিজিটাল ডকুমেন্টস ট্রাফিক পুলিশকে দেখালেও তা বৈধ বলে গণ্য করা হবে। আর এতেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন: ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য সেরা পাঁচটি স্কলারশিপ। বিস্তারিত জানুন।

চলতি বছর জানুয়ারি মাসেই এই নতুন ট্রাফিক আইন লাগু করেছে রাজ্য সরকার। এই আইন ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে অনেকদিন আগে চালু হলেও পশ্চিমবঙ্গে কিছুদিন আগেই চালু হয়েছে। এই নতুন ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মত, নতুন ট্রাফিক আইন প্রণয়নের ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ও অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই কমবে। যান চালকরা একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ থাকবেন। তাই ফাইন দিতে না চাইলে উপরিউক্ত ট্রাফিক আইনগুলি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।

ট্রাফিক আইন নিয়ে জনমানসে সচেতনতা ছড়ানোয় বদ্ধপরিকর সরকার। যদিও এই বিষয়ে সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ স্লোগানের দ্বারা রোড অ্যাকসিডেন্ট প্রতিরোধ করতে বহুদিন আগে থেকেই সক্রিয় হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন নিয়মাবলি লাগু হওয়ার ফলে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে আরও বেশি করে সচেতনতা ছড়ানো হলো সরকারের তরফে।

Like Facebook Page