লোকপ্রসার প্রকল্পে রাজ্য সরকারের তরফে শিল্পীদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ভাতা। শিল্পী মানুষদের শিল্প সত্ত্বাকে সন্মান জানিয়ে তাদের আর্থিক অভাব মেটাতে এই মহতি উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রত্যেক লোকশিল্পী কে সাম্মানিক মাসিক ১,০০০ টাকা প্রদান করে থাকে রাজ্য সরকার। এই ভাতা প্রদানের মাধ্যমে লোকশিল্পীদের শিল্পধারা কে বংশপরম্পরায় অক্ষুণ্ণ রাখতে একদিকে যেমন শিল্পীদের অর্থ সংস্থানের ব্যবস্হা করা হয়েছে। অন্যদিকে তেমনই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্প কে ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচারের জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে এই লোকশিল্পীদের। এই প্রকল্পে কিভাবে আবেদন করবেন এবং আবেদনের জন্য কি কি শর্ত মানতে হবে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
শিল্পী ভাতায় আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত:-
- শিল্পীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- আবেদনকারীকে বাধ্যতামূলকভাবে লোকশিল্পী হতে হবে অথবা লোকশিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
- আবেদনকারীর একটি বৈধ সচল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
লোক প্রসার প্রকল্পে কিভাবে আবেদন করবেন?
আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা ও লোকশিল্পী হয়ে থাকেন তবে এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে প্রথমে লোক প্রসার প্রকল্পের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে (https://wb.gov.in/government-schemes-details-lokprasar.aspx) Contact Us এ যান। এরপর Districts এ ক্লিক করুন। এখন আপনার জেলা নির্বাচন করে সেই জেলার অধীনে লোক প্রসার প্রকল্পে নাম রেজিষ্ট্রেশন কোথায় চলছে তার ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন?
উক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করে শিল্পী ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে নেবেন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস (আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ব্যাঙ্ক পাসবই, জাতিগত শংসাপত্র ও পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি) সহযোগে আবেদন ফর্ম জেলার নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে জমা করে আসবেন।
বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ ৯৪ হাজার লোকশিল্পী এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। সেই সংখ্যা ক্রমশই উর্ধ্বমুখী। এই প্রকল্পে লোকশিল্পীদের স্বীকৃতি স্বরূপ মাসিক ভাতা প্রদানের পাশাপাশি তাদের পরিচয় পত্রও (Identity Card) প্রদান করে থাকে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে ১৮-৬০ বছর বয়সী শিল্পী ভাতা পাওয়া লোকশিল্পীরা ৬০ বছরের উর্ধ্বে জীবন নির্বাহের জন্য রাজ্য সরকারের পেনশন স্কীমের অধীনে অন্তর্ভুক্ত হবেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠান গুলিতে অংশ নিলে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ পেয়ে থাকেন বাংলার শিল্পীরা
লোক প্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পের ধারাকে বজায় রাখতে এবং বলা বাহুল্য বাংলার লোকসংস্কৃতিকে পুন:রুজ্জীবিত করার লক্ষে রাজ্য সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে লোকশিল্পীরা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলা লোকশিল্পীদের একদিকে যেমন অর্থনৈতিক দৃঢ়তা প্রদান করা হয়েছে। তেমনই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজ সাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার ইত্যাদি একাধিক জনদরদি প্রকল্পের প্রচারাভিযানে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন বাংলার লোকশিল্পীরা।
আরও পড়ুনঃ- লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা পাচ্ছেন না? স্ট্যাটাস চেক করার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন।
শুধু তাই নয়। বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পের ধারাকে বংশপরম্পরায় অক্ষুণ্ণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এই লোকশিল্পীদের। ভারত ছাড়িয়ে বিশ্বেও বাংলা সংস্কৃতি-বাঙালির জয়জয়কার অব্যাহত। উল্লেখ্য, গেল বৎসর ডিসেম্বরে বাংলা তথা ভারতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ দুর্গাপূজা কে Intangible Culture Heritage এর স্বীকৃতি দিয়েছে UNESCO। এই বিশ্বজয়ের খুশির মুহূর্তে চলতি বছর জানুয়ারিতে কলকাতার রেডরোডে বিশাল সাংস্কৃতিক মিলন মেলার আয়োজন করা হয়।
এরকম সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের আপডেট আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে যুক্ত হোন।
টেলিগ্রাম চ্যানেল:- Link
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ:- Link