আপনার বাড়িতে বা দোকানে যদি কিছুটা জায়গা থেকে থাকে তবে সেখানে এটিএম মেশিন বসিয়ে কিম্বা ভাড়া দিয়ে মাসে কয়েক হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো Automated Teller Machine। অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো থেকে শুরু করে UPI সেটিংস সমস্ত ক্ষেত্র ATM নেটওয়ার্কের দ্বারা সম্পর্কবদ্ধ। তাই এটিএম সংক্রান্ত ডিজিটাল লেনদেন কে প্লাস্টিক মানি হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
এখন অধিকাংশ মানুষ স্ব শরীরে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তোলা অপেক্ষা ATM থেকেই টাকা তুলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। যদিও ডিজিটাল লেনদেন Advanced হওয়ায় এখন অনলাইন পেমেন্টও করা যায়। তবে টুকটাক খরচের জন্য কিম্বা অনলাইন পেমেন্ট ব্যর্থ হলে হাতে কিছু নগদের প্রয়োজন সবসময় হয়। এককথায় সমগ্র বিশ্বেই এটিএম ছাড়া সহজে ক্যাশ তোলার মতো বিকল্প হয়না।
তাই আপনিও যদি বাড়ি বা দোকানে এটিএম মেশিন বসিয়ে রোজগার করতে চাইছেন তাহলে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মন দিয়ে পড়ুন। কোন কোন কোম্পানি এটিএম মেশিন ভাড়া দিয়ে থাকে ও টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান করে থাকে, ব্যবসার জন্য কত টাকা ইনভেস্ট করতে হবে, কত টাকা কমিশন পাবেন, কিভাবে আবেদন করবেন সমস্ত কিছু আলোচনা করা হলো।
কোন কোন কোম্পানি এটিএম মেশিন সার্ভিস দিয়ে থাকে?
যেকোনো ব্যাঙ্কেরই এটিএম মেশিন বসানো, ভাড়া দেওয়া কিম্বা প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি কিন্তু এই সার্ভিস দেয় না। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কোম্পানি যেমন- Tata Indicash, Muthoot ATM, AGS, CMS ইত্যাদি কোম্পানিকে Tender মারফত সেই দায়িত্বভার অর্পণ করে থাকে।
ATM ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত:-
• আপনার ৫০-১০০ বর্গফুটের মধ্যে একটি জায়গার প্রয়োজন হবে।
• এটিএম ঘরটি গ্রাউন্ড লেবেলে হতে হবে, ঘরের ছাদ পাঁকা হতে হবে।
• ATM বসানোর স্থানটি জনবহুল হতে হবে।
• ওই এলাকায় ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ থাকতে হবে।
• দৈনিক গড়ে ১ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিষেবা যুক্ত স্থানই এটিএম বসানোর অনুকূল পরিবেশ।
কিভাবে আবেদন করবেন?
যেহেতু উক্ত কোম্পানি এই পরিষেবা প্রদান করে থাকে তাই এই ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলির রিজিওনাল অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। যেমন টাটা ইন্ডিক্যাশের জোনাল অফিস নিউ দিল্লী, পটনা তে রয়েছে। এই পরিষেবার সাথে যুক্ত হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা গুগলে সার্চ করে নিকটবর্তী কোম্পানি অফিসে গিয়ে সম্পূর্ণ বিষয়টি খোলসা করে আসতে পারেন।
কি কি নথি প্রয়োজন?
ATM Services এর জন্য আবেদনের সময় নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস গুলি নির্দিষ্ট অফিসে জমা করতে হবে।
• পরিচয় পত্রের (আধার/ভোটার/প্যানকার্ড) জেরক্স।
• যে স্থানে এটিম বসাবেন সেই জায়গার দলিল/পর্চা -র জেরক্স।
• পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
• স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র হিসেবে ইলেক্ট্রিসিটি বিল অথবা রেশন কার্ডের জেরক্স জমা করতে হবে।
• এছাড়াও আবেদনকারীর অবশ্যই একটি বৈধ মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি থাকতে হবে, যেখানে আপনার আবেদন যাচাই করার পর সেই সংক্রান্ত সমস্ত আপডেট পাঠানো হবে।
ইনভেস্ট ও আয়ের পরিমাণ:-
আপনি যদি এটিএম মেশিন কিনে তার থেকে আয় করতে চাইছেন তবে আপনাকে এককালীন ২-৩ লক্ষ টাকা দিয়ে মেশিন কিনতে হবে। এবং আপনার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে ২ লাখ টাকা Fixed Deposit করতে হবে Secuirity Money হিসেবে যেটা ফেরতযোগ্য। এই অ্যাকাউন্টে কোম্পানি প্রচুর টাকা ইনভেস্ট করবে গ্রাহকদের অর্থ লেনদেনের জন্য। এখান থেকে প্রতিটি ক্যাশ ট্রানজেকশন এর জন্য ৮-১১ টাকা এবং প্রতিটি নন- ক্যাশ ট্রানজেকশন এর জন্য ২-৩ টাকা মতো কমিশন পেয়ে যাবেন আপনি। দৈনিক গড়ে ৫০০ জন লোকও যদি সার্ভিস নেয় তবে দিনে ৫,০০০ টাকা মতো উপার্জন করতে পারবেন।
আপনি যদি মেশিন না কিনে কেবল ভাড়া দিতে চাইছেন তবে আপনাকে কেবল ফিক্সড ডিপোজিট ২ লাখ টাকা জমা করতে হবে। কোনো কোনো ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ৫ লক্ষ পর্যন্ত। আপনাকে শুধু ইলেকট্রিক বিল ও মেশিনের মেন্টেন্যান্স চার্জ মেটাতে হবে মাসে ৬-৭ হাজার টাকা মতো। এক্ষেত্রে লোকেশন ও জনসমাগম অনুযায়ী ভাড়া ও কমিশন মিলিয়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন আপনি। প্রতি মাসে সেই টাকা কোম্পানি কর্তৃক আপনার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।