মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরে কত শতাংশ নম্বর পেলে কোন স্কলারশিপ পাবেন ছাত্র-ছাত্রীরা?

এবছর মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ হয়ে সদ্য প্রকাশিত হয়েছে রাজ্যের দুই মেগা পরীক্ষার ফলাফল। ১ লা জুলাই থেকে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (অনার্স ও জেনারেল) কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পর্ব শেষ হলেই শিক্ষার্থীরা মুখিয়ে থাকেন বিভিন্ন স্কলারশিপের জন্য। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ও শিক্ষার্থীর মেধার ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, বিদ্যার্থীদের উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।

   

তবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এই বৃত্তি পাওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় বেশ কিছু শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। যেমন- বর্তমানে যে কোর্সে পাঠরত তার আগের শ্রেণীতে কত শতাংশ নম্বর পেয়েছেন? রেগুলার কোর্সে পাঠরত কি-না? পরিবারের বার্ষিক আয় কত, জাতিগত শংসাপত্র রয়েছে কিনা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই পোস্টে আমরা আলোচনা করতে চলেছি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরে ঠিক কত শতাংশ নম্বর পেলে কোন স্কলারশিপের জন্য যোগ্য অর্থাৎ কত নম্বর পেলে কোন স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন পড়ুয়ারা।

স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ:-

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ অর্থাৎ মাধ্যমিকে ৭০০ এর মধ্যে ন্যূনতম ৪২০ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০ এর মধ্যে ন্যূনতম ৩০০ বা তার বেশি নম্বর পেলে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন জানাতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য পড়ুয়াদের পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫ লাখ টাকার মধ্যে হতে হবে। রেগুলার কোর্সে পাঠরত পড়ুয়ারা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। সর্বোচ্চ ১ বছরের গ্যাপ ইয়ার থাকলে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যাবে। এই বৃত্তির অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাসে বছরে ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন স্টুডেন্টরা।

আরও পড়ুনঃ- পয়লা জুলাই থেকে দেশজুড়ে বদলে গেল ৬ নিয়ম। লাগু হচ্ছে নতুন নিয়ম।

নবান্ন বা উত্তরকন্যা বা মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল স্কলারশিপ:-

পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা লাভে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রত্যেক বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে নবান্ন বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের ৫০% থেকে ৫৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে থাকতে হবে। সেইসাথে পরিবারের বার্ষিক আয়ের ১.২ লাখ টাকার মধ্যে হতে হবে। এই স্কলারশিপের অধীনে শিক্ষার্থীদের এককালীন ১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই বৃত্তি পেতে ছাত্র-ছাত্রীদের রেজাল্ট বেরোনোর চলতি বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে।

ওয়েসিস বা অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের স্কলারশিপ:-

রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের যৌথ উদ্যোগে, যেসকল পড়ুয়া কেবল পাস নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের কোর্স অনুযায়ী বার্ষিক ৩ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে সরকার। বার্ষিক ইনকাম ২.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে এমন পরিবারের রেগুলার কোর্সে পড়ুয়ারাই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।

ঐক্যশ্রী বা মাইনরিটি বা সংখ্যালঘু স্কলারশিপ:-

পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের রাজ্য সরকারের তরফে ফি বছর এই বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। এই বৃত্তি পাওয়ার জন্য বর্তমান কোর্সে পাঠরত শিক্ষার্থীদের পূর্ববর্তী শ্রেণীতে পঞ্চাশ শতাংশের ওপরে নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে হলেই এই বৃত্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন পড়ুয়ারা।

আরও পড়ুনঃ- জুলাই মাসে বদলে গেল টাকা পাওয়ার নিয়ম। একটি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অধীনে এক পরিবারের সকল মহিলা পাবেন লক্ষ্মীর ভান্ডার।

ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল বা NSP:-

পরিবারের বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ ১.২ লাখ থেকে ২.৫ লাখ টাকার মধ্যে হলে এবং বার্ষিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ থেকে ৬০% বা ততোধিক নম্বর পেলে কেন্দ্রের National Scholarship Portal এর অধীনে Saksham Scholarship, Pragati Scholarship, Pre Matric, Post Matric Scholarship, Merit Cum Means স্কলারশিপ সহ কেন্দ্র ও রাজ্যের পড়ুয়াদের কোর্স, ডিপার্টমেন্ট ও রাজ্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্কলারশিপে আবেদন জানানো যায়।

তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কেবল একটি সরকারি স্কলারশিপ এবং যতখুশি বেসরকারি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমতি দিলে শিক্ষার্থী একটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্র সরকারের স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারে।

স্কলারশিপ সম্বন্ধে এইরকম গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম ও গুগল নিউজ এ ফলো করুন।

Telegram Channel:- Link

গুগল নিউজ:- Link

Like Facebook Page