পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের তালিকা একনজরে। কোন কোন প্রকল্পে কি কি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় জেনে নিন?

১) মাতৃযান প্রকল্প:- গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব যন্ত্রণার সময় তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০১১ সালে এই প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২) জল ধরো জল ভরো:- ২০১১ সালে আরেকটি প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করার জন্য।
৩) কন্যাশ্রী প্রকল্প:- ৮ই মার্চ, ২০১৩ তে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের কন্যাশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পের অধীনে ১৩-১৮ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রী কন্যারা প্রতিমাসে ১,০০০ টাকা করে বৃত্তি পেয়ে থাকেন। এবং ১৮ বছর সম্পন্ন হলে এককালীন পঁচিশ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন বাংলার কন্যারা। এই প্রকল্প বর্তমানে বিশ্ব দরবারে (UNESCO) স্বীকৃত। প্রতি বছর ১৪ই আগস্ট রাজ্যজুড়ে কন্যাশ্রী দিবস পালিত হয়।
৪) যুবশ্রী প্রকল্প:- ২০১৩ রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ ব্যাঙ্ক গঠন করে যুবশ্রী প্রকল্পের সূচনা করেন মাননীয়া। এই প্রকল্পের আওতায় যোগ্য বেকার যুবক যুবতীদের প্রত্যেক মাসে ১,৫০০ টাকা বেকারভাতা প্রদান করা হয়।
৫) শিশুসাথী প্রকল্প:- ২০১৩ সালে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হার্ট অপারেশনের জন্য শিশুসাথী প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৬) মধুর স্নেহ প্রকল্প:- ২০১৩ সালে UNESCO রিপোর্টে প্রকাশ করে ভারতে প্রত্যেক বছর ৬৯ শতাংশ শিশুর (৫ বছরের কম) অপুষ্টি জনিত কারণে মৃত্যু হয়। সেই বছরই মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শিশুদের অপুষ্টি ও দুধের অভাব মেটাতে দুধের সংরক্ষণ ভান্ডার তৈরি করে এই প্রকল্প চালু করেন।
৭) শিক্ষাশ্রী:- ২০১৪ সালে SC, ST ও ওবিসি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের বার্ষিক বৃত্তি প্রদানের জন্য শিক্ষাশ্রী প্রকল্প চালু করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে।
৮) ঐক্যশ্রী:- ২০১৪ আরেকটি স্কলারশিপ চালু করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সংখ্যালঘু (Minority) ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

   

৯) কর্মতীর্থ প্রকল্প:- স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের থেকে উৎপাদন করা দ্রব্য সামগ্রী গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে বিক্রির জন্য ২০১৪ কর্মতীর্থ প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
১০) লোকপ্রসার প্রকল্প:- বাংলার লোকশিল্পীদের স্বীকৃতি দিতে, গ্রাম বাংলার বিভিন্ন আঞ্চলিক শিল্প রক্ষা করতে এবং লোকশিল্পীদের ন্যূনতম মাসিক ভাতা প্রদান করা হয় ২০১৪ সালে সূচিত এই লোকপ্রসার প্রকল্পর মাধ্যমে।
১১) সুফল বাংলা:- চাষীদের কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য লাভ দিয়ে কিনে তা যুক্তিযুক্ত দামে মানুষের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে ২০১৪ তে সুফল বাংলা প্রকল্প চালু করে সরকার।
১২) সামাজিক সুরক্ষা যোজনা:- অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সন্তানের লেখাপড়া, শ্রমিকের পরিবারের অসুস্থ ও দুর্ঘটনাজনিত অবস্থায় আর্থিক সহায়তা ও বয়স্ক কালে পেনশন সহ একাধিক ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদানের জন্য ২০১৪ সালে এই প্রকল্পের সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৩) গতিধারা প্রকল্প:- ২০১৪ -র আগস্টে গতিধারা প্রকল্পের মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীদের ব্যবসা করার জন্য বাণিজ্যিক গাড়ি কিনতে ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
১৪) সবুজ সাথী প্রকল্প:- ২০১৫ সাল থেকে সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের সাইকেল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়।
১৫) সবুজশ্রী:- ২০১৬ সালে উদ্বোধিত এই প্রকল্পের মাধ্যমে জন্মের পর প্রত্যেক শিশু কে একটি করে মূল্যবান গাছ প্রদান করা হয়।
১৬) সমব্যথী:- ২০১৬ সালে সূচিত এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুঃস্থ মানুষের আত্মীয়-স্বজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ২,০০০ টাকা দেওয়া হয়।

১৭) উৎকর্ষ বাংলা:- ২০১৬ সালে প্রথম আয়োজিত বাংলার বেকার যুবক যুবতীকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষতা অনুযায়ী Job fair এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মমুখী করে তোলাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
১৮) স্বাস্থ্য সাথী:- ২০১৬ সালের ৩০শে ডিসেম্বর রাজ্যের গরীব মানুষের জটিল অসুখের চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের জন্য বছরে পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে।
১৯) সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ:- ২০১৬ তে পথঘাটে গাড়ি দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে এবং যানবাহনের গতিতে নিয়ন্ত্রণ এনে, জীবন রক্ষার্থে এই বিশেষ উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
২০) খাদ্য সাথী:- এটিও ২০১৬ সালে সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এর মাধ্যমে খাদ্য সাথী কার্ড হোল্ডারদের প্রত্যেক মাসে চাল, আটা, গম ইত্যাদি রেশন সামগ্রী বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।
২১) খেলাশ্রী প্রকল্প:- ২০১৭ সালে খেলাশ্রী প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার।
২২) মানবিক পেনশন:- ২০১৮ তে মানবিক প্রকল্প সূচনার মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের প্রত্যক মাসে ১,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়।
২৩) রুপশ্রী:- ২০১৮ সাল থেকে বার্ষিক আয় ১.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে এমন পরিবারের বিবাহযোগ্যা কন্যার বিয়ের জন্য এককালীন ২৫,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফে।
২৪) কৃষক বন্ধু:- ২০১৯ সাল হতে রাজ্যের কৃষকদের চাষাবাদ করার জন্য জমির পরিমাণ অনুযায়ী ন্যূনতম ৪,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা বছরের দুই কিস্তিতে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ- রাজ্যের নতুন প্রকল্প: স্নেহালয় হাউসিং স্কীম। নাম লেখালেই মিলবে বাড়ি তৈরির জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকার সরকারি অনুদান।

২৫) জাগো প্রকল্প:- ২০১৯ সাল হতে স্বনির্ভর দলের মহিলাদের সর্বমোট বার্ষিক পাঁচহাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়ে আসছে।
২৬) পথশ্রী অভিযান:- ২০২০ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামে গঞ্জে পুরাতন রাস্তা মেরামত করা হয়।
২৭) কর্মসাথী প্রকল্প:- ২০২০ সালে সূচিত এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য স্বল্প সুদের হারে ব্যবসার জন্য ঋণপ্রদান করা হয় সরকারের তরফে।
২৮) তপশিলি বন্ধু প্রকল্প:- ২০২০ সালে লাগু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে তপশিলি জাতি ও উপজাতির অন্তর্ভুক্ত ষাটোর্ধ বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের মাসিক একহাজার টাকা পেনশন প্রদান করা হয়।
২৯) হাসির আলো:- ২০২০ সাল থেকে রাজ্য সরকারের তরফে সূচিত হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের দুঃস্থ পরিবারগুলো কে ত্রৈমাসিক ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ফ্রি তে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে আসছে।
৩০) চা সুন্দরী:- চা বাগানের শ্রমিকদের আবাসন যোজনার আওতায় ঘর প্রদান এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। এটি ২০২০ সালে প্রথম শুরু হয়।
৩১) বাংলাশ্রী:- বাংলার মাঝারী ও ক্ষুদ্র শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ২০২০ তে বাংলাশ্রী প্রকল্প চালু করা হয়।
৩২) স্নেহালয় হাউসিং স্কীম:- এই প্রকল্পটি ২০২০ সালে আয়োজিত হয়। এই স্কীমের মাধ্যমে রাজ্যে বসবাসকারী যেসকল দরিদ্র মানুষ PMAY এর অধীনে ঘর পাননি তাদের পাঁকা বাড়ি তৈরির জন্য ১,২০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়ে আসছে।

৩৩) স্নেহের পরশ:- এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের ১,০০০ টাকা প্রদান করা হয়। ২০২০ সালে করোনা কালে প্রথম এই প্রকল্প চালু করা হয়।
৩৪) দুয়ারে সরকার:- ২০২০ সালে প্রথম আয়োজিত দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির পরিষেবা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
৩৫) স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড:- ২০২১ সালে প্রথম স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড স্কীম চালু করে রাজ্য সরকার। এই স্কীমের আওতায় যোগ্য পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়।
৩৬) দুয়ারে রেশন:- ১৬ নভেম্বর ২০২১ তে প্রথম দুয়ারে রেশন দেওয়ার উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার।
৩৭) লক্ষ্মীর ভান্ডার:- ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে বিধানসভা নির্বাচনের পরে বাংলার বেরোজগার বা কম আয়সম্পন্না মহিলাদের প্রতিমাসে ন্যূনতম আয়ের (তপশিলিদের ১,০০০ টাকা ও অন্যান্য মহিলাদের ৫০০ টাকা করে প্রদান) বন্দোবস্ত করতে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৩৮) মা প্রকল্প:- ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে প্রথম উদ্বোধিত মা ক্যান্টিনে ৫ টাকায় ডিম ভাত পাওয়া যায়।
৩৯) নিজ গৃহ নিজ ভূমি:- রাজ্যে বসবাসকারী ভূমিহীন, স্থায়ী আশ্রয়হীন মানুষদের স্থায়ী আশ্রয় করে দিতে এই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য।
৪০) গীতাঞ্জলি:- রাজ্যের প্রতিটি মানুষের জন্য সুনিশ্চিত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে গীতাঞ্জলি প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার।

৪১) সবলা:- রাজ্যের কিশোরীদের স্বাস্থ্যের উন্নতি, কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
৪২) উৎসশ্রী:- এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি থেকে দূরে চাকরিরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়ির নিকট বিদ্যালয়ে শূন্যপদ থাকলে উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলির জন্য আবেদন করতে পারেন।
৪৩) পথসাথী:- পথ চলতি পথিকদের জন্য শৌচালয় ব্যবহার, রাত্রিবাস ও খাবারের জন্য পথসাথী প্রকল্পের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

এমন আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ এ জয়েন করুন। তথ্টি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

টেলিগ্রাম:- Link

হোয়াটসঅ্যাপ:- Link

Like Facebook Page